হিউম্যান মেটাপিউমোভাইরাস (HMPV): লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা
হিউম্যান মেটাপিউমোভাইরাস (HMPV): লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
হিউম্যান মেটাপিউমোভাইরাস (HMPV) একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা প্রধানত শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল ইমিউন সিস্টেমযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়। এই ভাইরাসটি প্রথম ২০০১ সালে আবিষ্কৃত হয় এবং এটি প্যারামিক্সোভাইরিডি পরিবারের অন্তর্গত। HMPV শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের একটি সাধারণ কারণ, বিশেষ করে শীতকাল এবং বসন্তকালে।
HMPV এর লক্ষণ
HMPV সংক্রমণের লক্ষণগুলি সাধারণ সর্দি-কাশি বা ফ্লুর মতো হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
– জ্বর
– কাশি
– গলা ব্যথা
– নাক দিয়ে পানি পড়া
– শ্বাসকষ্ট
– হাঁপানি বা ব্রঙ্কিওলাইটিস (বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে)
– ক্লান্তি
এই লক্ষণগুলি সাধারণত সংক্রমণের ৩-৬ দিন পরে দেখা দেয় এবং ১-২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
কারা ঝুঁকিতে আছেন?
– শিশু (বিশেষ করে ৫ বছরের কম বয়সী)
– বয়স্ক ব্যক্তি (৬৫ বছরের বেশি)
– যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল (যেমন ক্যান্সার, এইডস বা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের রোগী)
– যাদের ক্রনিক ফুসফুসের রোগ (যেমন হাঁপানি বা সিওপিডি) রয়েছে
HMPV কীভাবে ছড়ায়?
HMPV প্রধানত শ্বাসনালীর মাধ্যমে ছড়ায়। যখন একজন সংক্রমিত ব্যক্তি কাশি বা হাঁচি দেয়, তখন ভাইরাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্য ব্যক্তি শ্বাসের মাধ্যমে এটি গ্রহণ করে। এছাড়াও, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা বস্তু স্পর্শ করেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়:
– হাত ধোয়া: সাবান ও পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া।
– মাস্ক ব্যবহার: শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করা।
– সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়ানো: অসুস্থ ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়া এড়িয়ে চলুন।
– বস্তু পরিষ্কার করা: নিয়মিত স্পর্শ করা জিনিসপত্র (যেমন দরজার হাতল, ফোন) পরিষ্কার করুন।
চিকিৎসা:
HMPV এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। চিকিৎসা সাধারণত লক্ষণভিত্তিক হয়:
– জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন।
– পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও তরল পান করা।
– শ্বাসকষ্টের ক্ষেত্রে ইনহেলার বা অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।
গুরুতর ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল বা শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা রয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারে।
উপসংহার:
HMPV একটি সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।