বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে যেন পেছনে নেই স্বর্ণ, রূপা এবং তামা। সোমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছুঁয়েছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ—২,৪৫০ ডলার। একইসঙ্গে রূপা
বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে যেন পেছনে নেই স্বর্ণ, রূপা এবং তামা। সোমবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছুঁয়েছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ—২,৪৫০ ডলার। একইসঙ্গে রূপার দামও উঠে গিয়েছিল প্রতি আউন্সে ৩১ ডলারের ওপরে, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর শিল্পখাতে বহুল ব্যবহৃত তামার দামও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) কিছুটা কমলেও এখনো রেকর্ডমূল্যের কাছাকাছিই অবস্থান করছে এই তিন মূল্যবান ধাতু। বাজারে জোর গুঞ্জন, আগামী এক বছরের মধ্যে দাম আরও বাড়তে পারে।
সোমবারের হিসেবে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ২,৪৪৯ ডলার ৮৯ সেন্টে। যদিও মঙ্গলবার তা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ২,৩৫১ ডলারে, তবে ডলারের মূল্য কিছুটা কমলেও স্বর্ণ তার শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং চীনের ব্যাপক চাহিদা—এই দুই কারণেই স্বর্ণের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী।
২০২৩ সালে স্বর্ণালঙ্কার কেনার দৌড়ে চীন ছাড়িয়ে গেছে ভারতকে। ওই বছর চীনা ভোক্তারা ৬০৩ টন স্বর্ণালঙ্কার কিনেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে বিশুদ্ধ স্বর্ণের সবচেয়ে বড় ক্রেতাও চীন। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর চীনের চাহিদা আরও বাড়তে পারে, যা ২০২৩ সালের রেকর্ডও ছাড়িয়ে যেতে পারে। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, এই ধারা বজায় থাকলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই স্বর্ণের দাম ২,৫০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং বছরের শেষ নাগাদ তা পৌঁছাতে পারে ২,৬০০ ডলার পর্যন্ত।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে স্বর্ণ কেনায় একটু ধীরগতিতে থাকলেও, অন্যান্য দেশগুলো সেই ঘাটতি পূরণ করছে। তবে চীনের অর্থনৈতিক খাতে—বিশেষ করে আবাসন ও পুঁজিবাজারে—নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হওয়ায় দেশটির বিনিয়োগকারীরা বেশি আস্থা রাখছেন স্বর্ণেই।
স্বর্ণের পর বাজারে আলোচনায় রূপা। সরবরাহে কিছু জটিলতা এবং বিনিয়োগকারীদের বাড়তি আগ্রহের কারণে গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স রূপার দাম উঠে যায় ৩১ ডলার পর্যন্ত। অলঙ্কার ছাড়াও রূপা বহুল ব্যবহৃত হয় গাড়ি, সৌরপ্যানেল এবং ইলেকট্রনিক পণ্যের উৎপাদনে।
এদিকে, তামার দামও দৌড়াচ্ছে ঊর্ধ্বমুখী ধারায়। গত মঙ্গলবার প্রতি টনের দাম পৌঁছায় ১০,৮৫৭ ডলারে; বর্তমানে তা কিছুটা কমে ১০,২৫৬ ডলারে থাকলেও, বাজারে চাহিদা এখনও চাঙ্গা।
অন্যদিকে, প্লাটিনাম, প্যালেডিয়াম ও রোডিয়ামের দাম আপাতত নিম্নমুখী থাকলেও, বিশ্লেষকরা মনে করছেন বছরের শেষদিকে এদের দামেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।
COMMENTS